Jump to content

Wn/bn/সাংবাদিক রোজিনাকে 'অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট' মামলায় গ্রেপ্তার, রিমান্ড আবেদন নাকোচ

From Wikimedia Incubator
< Wn | bn
Wn > bn > সাংবাদিক রোজিনাকে 'অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট' মামলায় গ্রেপ্তার, রিমান্ড আবেদন নাকোচ

মঙ্গলবার, ১৮ মে ২০২১

মঙ্গলবার সকাল ৮টায় আদালতে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে 'অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট' আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

তাকে সোমবার দুপুরের পরে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবালয়ের, একান্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞার কক্ষে আটক করা হয়। যার পরে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা থেকে সাড়ে ছয় ঘণ্টা তাকে সেখানে আটক রাখা হয়। রাত ৮টার দিকে শাহবাগ থানায় তাকে নিয়ে যায় পুলিশ।

শিব্বির আহমেদ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব, বাদী হয়ে তার নামে মামলা করে। তখন রাত সাড়ে দশটার দিকে শাহবাগ থানার ভিতরে একদল সাংবাদিক বিক্ষোভ করে এবং রোজিনা ইসলামের নিঃশর্তে মুক্তির দাবি জানান।

রোজিনার স্বামী, মিঠু, অভিযোগ জানান যে রোজিনাকে হেনস্তা করা হয়েছে এবং অসুস্থ অবস্থায় তাকে গলা টিপে ধরা, ফেলে দেওয়া ও হাতে মোচড় দেয়া হয়েছে। রোজিনা সচিবের কক্ষ থেকে কোনো ছবি বা কাগজ না নিলেও তাকে জোড় করে জবানবন্দি দেয়ানোর চেষ্টা করেন কন্সটেবল মিজান। পরে অতিরিক্ত দুই সচিবও এসে তাকে হেনস্তা শুরু করেন। কন্সটেবল মিজান ও পিয়ন এর হেনস্তায় তার চামড়া ছিলে যায়। তার ব্যাগে পাওয়া একটি কাগজ কোথা থেকে তিনি পেয়েছেন তা জিজ্ঞেস করলে হেনস্তার এক পর্যায়ে তিনি উৎস(সোর্স) বলে দেন। যার পরে তাকে ওই কক্ষে থানায় না নেয়া পর্যন্ত আটক রাখা হয়। রোজিনার স্বামী পাল্টা মামলা করবেন বলেও পরে জানিয়েছেন। মিঠু আরও জানান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনের পর পরই তাদেরকে

সচিবালয়ের কক্ষের বাইরে কী হয়েছে জানতে চাইলে সচিব কথা বলতে অসম্মতি জানায়। রোজিনা ইসলামের বক্তব্য মতে তিনি যখন সচিবের সাথে দেখা করতে আসেন তখন একান্ত সচিব সাইফুলের কক্ষে আসেন, তখন হঠাৎ করে পুলিশ ডেকে এনে তাকে আটক করা হয়।

সোমবার রাত ৯টার দিকে মো. মাইদুল ইসলাম প্রধান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা, সাংবাদিকদের সামনে অভিযোগের বিষয়গুলো নিয়ে বলেন, “সচিবের পিএসের রুমে ঢুকে তিনি (রোজিনা) মোবাইলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইল-নথির ছবি তোলেন। আর কিছু কাগজপত্র তিনি সাথে নিয়ে যাচ্ছিলেন।

“একজন অতিরিক্ত সচিব, পুলিশের একজন সদস্য দেখে তাকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, এটা তিনি নিয়ে যেতে পারেন না। তখন পুলিশকে জানানোর পর মহিলা পুলিশ আসে। এখন তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”

রাত সাড়ে ১২টায় অতিরিক্ত উপকমিশনার(এডিসি) হারুন অর রশীদ থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, "বাদীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে। দণ্ডবিধির ৩৭৯ এবং ৪১১ ধারা, অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট-১৯২৩-এর ৩ এবং ৫ ধারা অনুযায়ী রোজিনা ইসলামের নামে মামলা করেছেন উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী। এ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।"

ওইদিন সকালে রোজিনা ইসলাম টিকা নেওয়ায় তিনি একটু অসুস্থ ছিলেন, জানিয়েছে তার বোন।

গ্রেপ্তারের আগে তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন বানান যা খুব আলোচিত হয়েছিল। প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক, সাজ্জাদ শরিফ, এর মতে এই কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথম আলোর সম্পাদক আনিসুল হক বলেন “... সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সাংবাদিকতার জন্যে দরকার না, এটা দেশের জন্যে দরকার, গণতন্ত্রের জন্যে দরকার, মানুষের জন্যে দরকার। ছলে-বলে-কৌশলে নানান প্রকার হয়রানি করে হামলা করার যে চেষ্টা এটা সরকারের জন্যে অন্তর্ঘাত হচ্ছে। আমাদের জন্যে এটা মানার মতোন না। অবিলম্বে রোজিনার মুক্তি চাই।”

দেশি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পত্রিকায় ঘটনাটি ছাপা ও নিন্দা জানানো হচ্ছে। যার মধ্যে আছে সিপিজে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

সকালে আদালতে নেওয়ার পর ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন নাকচ করা হয়। জামিন আবেদনে বৃহস্পতিবার শুনানি হবে। আদালত ৮টায় হওয়ার কথা থাকলেও বসে ১১টায়।


উৎস

[edit | edit source]