Wn/bn/বিক্ষোভ ও সহিংসতার মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন
মঙ্গলবার, ৬ আগস্ট ২০২৪
সম্পর্কিত শিরোনামগুলো | |
---|---|
| |
অংশগ্রহণ | |
কয়েক সপ্তাহ ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর সোমবার পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি চাকরির কোটা নিয়ে শুরু হওয়া বিক্ষোভ উনার পদত্যাগের দাবিতে গণআন্দোলনের রূপ ধারণ করেছিল। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে শতাধিক নিহত হয়েছেন। উনার পদত্যাগের পরে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে দেশটি ভিন্ন অশান্ত ঘটনাগুলির পরিণামের সাথে লড়াই করছে।
বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েক সপ্তাহের মারাত্মক সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর সোমবার পদত্যাগ করেন এবং দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। ঢাকা থেকে পালিয়ে দিল্লির হিন্দন ঘাঁটিতে অবতরণের ২৪ ঘণ্টা পরও শেখ হাসিনার চূড়ান্ত গন্তব্য অনিশ্চিত। যুক্তরাজ্য উনার আশ্রয়ের অনুরোধ গ্রহণ করার সম্ভাবনা কম, তাই তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত সহ অন্যান্য দেশগুলির সাথে বিকল্পগুলি অন্বেষণ করছেন৷
সিভিল সার্ভিস চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা জুলাইয়ের শুরুতে বিক্ষোভ শুরু করে, যেখানে এক তৃতীয়াংশ পদ স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রবীণদের আত্মীয়দের জন্য সংরক্ষিত ছিল। কোটা বাতিলের শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও, বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল এবং যা একটি বৃহত্তর সরকার বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। অস্থিরতার ফলে বিক্ষোভকারী এবং পুলিশের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়। রবিবার একটি বিশেষ সহিংস দিনে পরিণত হয়, যেখানে ১৩ জন পুলিশ কর্মকর্তা সহ প্রায় শতাধিক লোক নিহত হয়েছেন। বিক্ষোভের শুরু থেকে মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় তিনশো জনেরও বেশি বলে অনুমান করা হচ্ছে।
বিবিসি এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার সকাল নাগাদ শেখ হাসিনা নিজেকে একটি অচলাবস্থার মধ্যে খুঁজে পান, সেনাবাহিনীর ক্রমবর্ধমান চাপ এবং নিরলস প্রতিবাদের মুখোমুখি হন। এই চাপ এবং রবিবারের সংঘর্ষের হিংস্রতার ফলে শেষ পর্যন্ত তিনি পদত্যাগ করেন এবং দেশ ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উনার পদত্যাগের পর, বিপুল জনতা ঢাকায় উনার সরকারি বাসভবনে হামলা চালায়, যার ফলে রাজধানীতে লুটপাট ও ব্যাপক বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। “আমরা আজকে সুন্দর ভাবে কথা বলেছি। প্রধান প্রধান দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আমরা সুন্দর আলোচনা করেছি। এই আলোচনা ফলপ্রসূ হবে বলে মনে করছি। সুন্দর একটা অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। এখন একটা অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবো,” তিনি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক বক্তৃতায় বলেছিলেন।
হাসিনার পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টা পর, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন কারাগারে বন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং সাম্প্রতিক বিক্ষোভের সময় আটক সকল ছাত্রদের মুক্তির নির্দেশ দেন। এই পদক্ষেপকে অস্থিরতা প্রশমিত করার এবং আরও স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা হিসাবে দেখা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার পদত্যাগের দিনই, বিক্ষোভকারীরা উনার পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি ভাংচুর করে এবং আওয়ামী লীগের সদর দফতরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয় এবং ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়। সংখ্যালঘু ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা জনিত একাধিক ঘটনা পরিলক্ষিত হয় এবং ৩০টি জেলা জুড়ে সম্পত্তি ও মন্দির ধ্বংস করা সম্পর্কিত ঘটনার খবর পাওয়া যায়।
সম্পর্কিত নিবন্ধ
[edit | edit source]- সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি নিয়ে বাংলাদেশে সহিংস সংঘর্ষ শুরু হয়েছে - ২০ জুলাই ২০২৪, উইকিসংবাদ।
সহ প্রকল্প নিবন্ধ
[edit | edit source]- ২০২২–২০২৩ বাংলাদেশ বিক্ষোভ - উইকিপিডিয়া
- অসহযোগ আন্দোলন (২০২৪) - উইকিপিডিয়া
- ২০২৪-এ বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন - উইকিপিডিয়া
উৎস
[edit | edit source]- "নতুন সরকার গঠন ও শেখ হাসিনার বিদায় নিয়ে সেনাপ্রধান যা বললেন" — বিবিসি বাংলা, ৫ অগাস্ট, ২০২৪
- "৫ জুন থেকে ৫ অগস্ট: কী ভাবে রক্তে লাল হল বাংলাদেশের মাটি? কেমন ছিল আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি?" — আনন্দবাজার পত্রিকা, ৬ আগস্ট, ২০২৪
- "সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় ইইউ রাষ্ট্রদূতদের গভীর উদ্বেগ" — প্রথম আলো, ৬ অগাস্ট, ২০২৪
- সুদীপ্ত গাঙ্গুলি। "Bangladeshi Protesters Vandalise Sheikh Mujibur Rahman's Statue" — এনডিটিবি, ৫ অগাস্ট, ২০২৪ (ইংরেজি)
- সুদীপ্ত গাঙ্গুলি। "Explainer: Why did Bangladesh PM Sheikh Hasina resign and where is she now?" — রয়টার্স, ৬ অগাস্ট, ২০২৪ (ইংরেজি)
- সুহাসিনী হায়দার। "Sheikh Hasina looks at UAE, Saudi for asylum" — দ্যা হিন্দু, ৬ অগাস্ট, ২০২৪ (ইংরেজি)