User:অসীম চাকমা

From Wikimedia Incubator

বাংলাদেশের এক দশমাংশ এলাকা জুড়ে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় পাহাড়ী অঞ্চল পার্বত্য চট্টগ্রাম। দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আশির দশকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলাকে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান এই তিন পার্বত্য জেলা নামে বিভক্ত করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের নিরিখে খাগড়াছড়ি জেলা সমধিক পরিচিত।

এ জেলার প্রধান নদী যা শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে। জেলা শহর থেকে দক্ষিণে অনতিদুরে বেতছড়ি নামে ছোট্ট একটি নদী চেঙ্গী নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে পূর্ব দিকে পাহাড়ের পাদদেশে ছুঁয়েছে। অনেক পুরানো বসতি নদীর নামেই বেতছড়ি গ্রাম। এ গ্রামেরই বাসিন্দা বাবু যামিনী চাকমা ও তাঁর সহধর্মীনি সুশ্রদ্ধামূখী চাকমার সুপুত্র শ্রীমৎ সাধনাজ্যোতি ভিক্ষু। ১৯৭৬ সালে ১২এপ্রিল বেতছড়ি গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর গৃহী নাম অসীম চাকমা (রুনু)। পাঁচ বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি হলেন তৃতীয়। বাল্যকাল থেকে তিনি শান্ত প্রকৃতির ছিলেন। শিক্ষা জীবন শুরু হয় নিজ গ্রামেই। মাধ্যমিক পর্যায়ে মাইচছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করলেও ১৯৯৪ সালে লহ্মীছড়ি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সহিত মাধ্যমিক পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হন। ১৯৯৭ সালে রাঙ্গুনীয়া ডিগ্রী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর পালি সাহিত্য নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ২০০৩ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ (অর্নাস), এম. এ ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ২০০৮ সালে ২৯ মার্চ ভারতে মগধ বিশ্ববিদ্যালয় অধীনে পি.এইচ.ডি এডমিশন পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে উত্তীর্ণ হন। কিন্তু দুঃখের বিষয় কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়াশুনা চালাতে আর সম্ভব হয়নি। তবু থেমে নেই, শিক্ষার প্রতি প্রগার অনুরাগ থাকাতে তিনি আবার ২০১১ সালে চট্টগ্রামে দারুল আহসান বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম.এড ডিগ্রী লাভ করেন।

১৯৯৬ সালে ১৪ মার্চ ভদন্ত সাধনাজ্যোতি প্রবজ্যা দুর্লভ ভিক্ষুত্ব জীবন লাভ করেন। তাঁর দীক্ষাগুরু শ্রীমৎ পূর্ণজ্যোতি মহাথের (যিনি ২০০৩ সালে বনায়ন ও বৃক্ষরোপণ অভিযানে বিশেষ অবদান রাখায় “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক কর্মবীর উপাধিতে ভূষিত হন।) ১৯৯৬ সালে ২৬ শে এপ্রিল রাউজান হলদিয়া সত্তা নদীর উদক সীমায় তিনি শুভ উপসম্পদা লাভ করেন। তাঁর সীমা গুরু হচ্ছেন ভদন্ত শীল রক্ষিত মহাথের, ভদন্ত সুমেদানন্দ স্থবির, ভদন্ত ভবানন্দ স্থবির, ভদন্ত দীপানন্দ স্থবির, ভদন্ত ধর্মপাল ভিক্ষু, ভদন্ত অরুণজ্যোতি ভিক্ষু। তিনি এ যাবৎ বিভিন্ন বিহারে অবস্থান করেন। সেগুলো হল: ১) গহিরা জেতবন বৌদ্ধ বিহার, গহিরা অঙ্কুর ঘোনা, রাউজান (১৯৯৬-৯৭, ২বর্ষা), ২) কোটের পাড় ত্রিরতœাঙ্কুর বৌদ্ধ বিহার, জাহানপুর, ফটিকছড়ি (১৯৯৮-২০০২, ৬বর্ষা), ৩) বিনাজুরী শ্মশান বিহার, বিনাজুরী, রাউজান (২০০৩, ১বর্ষা), ৪) আব্দুল্লাহপুর শাক্যমণি বিহার, আব্দুল্লাহপুর, রাউজান (২০০৪-০৬, ৩বর্ষা), ৪) মৈত্রী বৌদ্ধ বিহার, সিমেন্ট ক্রসিং, পতেঙ্গা চট্টগ্রাম (২০০৭, ১বর্ষা), ৫) হিল চাদিগাং বৌদ্ধ বিহার, সল্টগোলা ক্রসিং, বন্দর, চট্টগ্রাম (২০০৮-চলমান)। জ্ঞান অন্বেষণে উৎসুক শ্রীমৎ সাধনা জ্যোতি ভিক্ষু বেতছড়ির মত গ্রাম থেকে গন্ডি পেরিয়ে মহান বুদ্ধের জীবন দর্শনকে ধারণ করে সর্দ্ধম প্রচারে যেভাবে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন তা সত্যি অগ্রগণ্য। আমি তাঁর এ পথ চলা দৃঢ় ও সাফল্য কামনা করি।