Wn/bn/বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ

From Wikimedia Incubator
< Wn‎ | bn
Wn > bn > বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ

শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

ষষ্ঠ ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪ জন, নারীর সংখ্যা ৮ কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী ১২ হাজার ৬২৯ জন।

বুধবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রথম ডিজিটাল ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ ফলাফল জানানো হয়। সারাদেশে গত ১৫ জুন একযোগে শুরু হয় জনশুমারি ও গৃহগণনা কার্যক্রম। গত ২১ জুন জনশুমারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলায় বন্যা শুরু হওয়ায় এসব জেলায় শুমারি কার্যক্রম ২৮ জুন পর্যন্ত চলে।

বিবিএসের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২২ শতাংশ, এক দশক আগে যা ছিল ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। দেশে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যা ঘনত্বের হার ১ হাজার ১১৯ জন এক দশক আগে যা ছিল ৯৭৬ জন।

এছাড়া ৯৮ জন পুরুষের বিপরীতে নারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০০ জনে। চলতি বছরের জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানেই অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছেন জনসংখ্যা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম। তার মতে মূলত মেয়েদের জীবনের আয়ুষ্কাল বেশি হওয়া এবং অভিবাসনই নারীর সংখ্যা বেশি হওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

দেশে ১০ থেকে তার বেশি বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে ২৮ শতাংশ অবিবাহিত এবং বিবাহিত ৬৫ শতাংশ। দেশে মোট সাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এছাড়া প্রতিবন্ধিতার হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশের সব বিভাগেই বেড়েছে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা। বর্তমানে মুসলমান ৯১.০৪ শতাংশ। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মুসলমানের সংখ্যা ছিল মোট জনগোষ্ঠীর ৯০.৩৯ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, সব বিভাগেই কমছে হিন্দু, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্মের জনগোষ্ঠীর সংখ্যা। বর্তমান শুমারিতে হিন্দু জনগোষ্ঠী মোট জনসংখ্যার ৭.৯৫ শতাংশ। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এটি ছিল ৮.৫৪ শতাংশ।

প্রতিবেদন অনুসারে খ্রিস্টান জনগোষ্ঠী মোট জনসংখ্যার ০.৩০ শতাংশ; ২০১১ সালে যা ছিল ০.৩১ শতাংশ। বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী মোট জনসংখ্যার ০.৬১ শতাংশ, ২০১১ সালের যা ছিল ০.৬২ শতাংশ। এ ছাড়া অন্যান্য জনগোষ্ঠী মোট জনসংখ্যার ০.১২ শতাংশ; যা ২০১১ সালে ছিল ০.১৪ শতাংশ।

বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর হার ৫৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৩০ দশমিক ৬৮ শতাংশ। দেশে মোট খানার সংখ্যা ৪ কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার ৫১টি। গড়ে খানার আকার ৪ জন, এক দশক আগে যা ছিল সাড়ে ৪ জন।

বিবিএসের শুমারি অনুসারে, দেশের মোট জনসংখ্যার ১১ কোটি ৩০ লাখ ৬৩ হাজার ৫৮৭ জন গ্রামের বাসিন্দা। আর শহরের বাসিন্দা পাঁচ কোটি ২০ লাখ নয় হাজার ৭২ জন। দেশে জনসংখ্যার গড় বার্ষিক বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২২ শতাংশ। ২০১১ সালের শুমারিতে এই হার ছিল ১ দশমিক ৪৬। দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব এক হাজার ১১৯। যা ২০১১ সালে ছিল ৯৭৬। দেশে স্বাক্ষরতার হার ৭৪ দশমিক ৬৬। পুরুষ জনগোষ্ঠীর স্বাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ, নারী জনগোষ্ঠীর এ হার ৭২ দশমিক ৮২।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজশাহীতে বিবাহিতদের সংখ্যার হার বেশি। আবার বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাকের ঘটনাও বেশি রাজশাহীতে। বিধবা ও বিপত্নীকের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে রংপুর। আর দাম্পত্য সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন বেশি খুলনা বিভাগে।

জনশুমারি ও গৃহগণনার ফলাফল অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার হিসেবে খোলা জায়গায় টয়লেট ব্যবহারে শীর্ষে রয়েছে রংপুর বিভাগ, যা শতকরা ৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সিলেট বিভাগ, যা শতকরা ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রাজশাহী, যা শতকরা ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। চতুর্থ অবস্থানে ময়মনসিংহ, যা শতকরা ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ। পঞ্চম অবস্থানে চট্টগ্রাম, যা শতকরা দশমিক ৯০ শতাংশ। ষষ্ঠ অবস্থানে খুলনা, যা শতকরা দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং তারপরে রয়েছে বরিশাল, যা শতকরা দশমিক ৩০ শতাংশ। আর এ তালিকায় সর্বনিম্নে রয়েছে ঢাকা বিভাগ, যা শতকরা হিসেবে দশমিক ২৮ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জাতীয় পর্যায়ে ৫৬ দশমিক ০৪ শতাংশ বাথরুমে ফ্ল্যাশ করে বা পানি ঢেলে নিরাপদ টয়লেট সুবিধা রয়েছে। ২১ দশমিক ৭২ শতাংশ বাথরুমে স্ল্যাবসহ পিট ল্যাট্রিন বা ভেন্টিলেটেড ইমপ্রুভড ল্যাট্রিন-কম্পোস্টিং টয়লেট সুবিধা রয়েছে এবং ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বাথরুমে টয়লেট সুবিধা নেই।

বিবিএস জানায়, এক দশকে দেশে জনসংখ্যা বেড়েছে ২ কোটি ১১ লাখ ১৪ হাজার ৯১৯ জন। সর্বশেষ ২০১১ সালের জনশুমারির অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৪০ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯৭।

প্রসঙ্গত, বিবিএস প্রতিবেদনে দেখা যায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম শুমারিতে দেশের জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি ১৫ লাখ। এরপর ১৯৮১ সালে জনশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় মোট জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ কোটি ৭১ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৫ জনে। ১৯৯১ সালে দেশে মোট জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ কোটি ৬৩ লাখে।

২০০১ সালে চতুর্থ আদমশুমারি ও গৃহগণনা করা হয়, এসময় জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১২ কোটি ২৪ লাখ। ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম জনশুমারিতে দেখা যায়, দেশের জনসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৪ কোটি ৪০ লাখ। ষষ্ঠ ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এ বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন।

উৎস[edit | edit source]