Jump to content

Wn/bn/গাজায় ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৪১৩

From Wikimedia Incubator
< Wn | bn
Wn > bn > গাজায় ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৪১৩

বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

১৮ মার্চ রাতে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় একটি আকস্মিক হামলা চালায়, যা ২০২৫ সালের গাজা যুদ্ধের অস্ত্রবিরতি সমাপ্ত করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এই হামলায় অন্তত ৪১৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী, শিশু ও বয়স্ক নাগরিক। গাজার উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং হামাসের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা মাহমুদ আবু ওয়াফাহও নিহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। এই তথ্যটি মঙ্গলবার বিবিসি ও আলজাজিরার লাইভ আপডেটে প্রকাশিত হয়েছে।

আলজাজিরা তাদের সরাসরি সম্প্রচারে জানায়, ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে বিমান হামলা শুরু করেছে, যার ফলে অন্তত ৪১৩ জন নিহত এবং অনেক মানুষ আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুদের সংখ্যাও অনেক। গাজার উত্তরাঞ্চলে দেড় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, গাজার উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আবু ওয়াফাহ এক হামলায় নিহত হয়েছেন। ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর এটিই ছিল গাজায় সবচেয়ে বড় বিমান হামলা। যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাড়ানোর আলোচনায় ব্যর্থতার পরই এই হামলা শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পবিত্র রমজান মাসের সেহরি সময়ে হামলা এবং বিস্ফোরণ ঘটে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ মঙ্গলবার সকালে হামলার নির্দেশ দেন, এ তথ্য তাদের অফিস থেকে প্রকাশ করা হয়। তাদের দাবি, হামাস বন্দীদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানানো এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের দূত স্টিভ উইটকফ ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা চালানো হচ্ছে। তারা আরও জানিয়েছে, ইসরায়েল এখন হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করবে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস ইসরায়েলের এই হামলা সম্পর্কে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই নারী, শিশু এবং বয়স্ক মানুষ। কিছু পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, "এই নৃশংস গণহত্যা আবারও প্রমাণ করেছে যে ইসরাইলি বাহিনী কেবল হত্যার ভাষা বোঝে।"

গাজার মিডিয়া অফিস আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতিসঙ্ঘ এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর কাছে ইসরায়েলের এই হামলার বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে, ইসরায়েলি দৈনিক মারিভ জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সাক্ষ্য স্থগিত করা হয়েছে, যা মঙ্গলবার হওয়ার কথা ছিল। নিরাপত্তার পরিস্থিতি বিবেচনা করে নেতানিয়াহু সাক্ষ্য স্থগিতের আবেদন করেন, এবং আদালত তা মেনে নেয়।

রয়টার্স জানিয়েছে, গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামলা চলছে, যার মধ্যে গাজার উত্তরাঞ্চল, গাজা সিটি, দেইর আল-বালাহ, খান ইউনুস এবং রাফাহ রয়েছে।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভাঙার অভিযোগ এনেছে এবং জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি বন্দীদের "অজানা পরিণতির" সম্মুখীন করেছে ইসরায়েল। তবে হামাস এখনও যুদ্ধ শুরু করার ঘোষণা দেয়নি এবং বরং জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে, ইসরায়েলের একটি সামরিক কর্মকর্তা গাজায় স্থল আক্রমণের হুমকি দিয়েছেন, যা গাজার পরিস্থিতিকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করতে পারে। হামাস এই বিষয়ে জাতিসঙ্ঘ এবং আরব লীগকে গাজায় আরোপিত অবরোধ ভাঙতে এবং ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, যেমন রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম ও জাতিসঙ্ঘ এই হামলার প্রতি উদ্বেগ জানিয়েছে এবং সব পক্ষকে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে। তারা গাজার পরিস্থিতি আরও উত্তেজনা সৃষ্টি না করার জন্য সতর্ক করেছে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র বলেছেন, ইসরায়েল এই হামলার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা করেছে।


উৎস

[edit | edit source]